a baby with blonde hair

শিশুদের দাঁতের যত্নঃ দুধ দাঁত পড়ে যাওয়ার আগেই কেন ডেন্টাল কেয়ার জরুরি?

শিশুর দুধ দাঁতকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়, কিন্তু সুস্থ স্থায়ী দাঁতের ভিত্তি তৈরি হয় ঠিক এই দুধ দাঁত থেকেই। নিয়মিত ডেন্টাল কেয়ার না করলে ক্যাভিটি, দাঁতের বাকা হয়ে ওঠা, এমনকি খাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই ছোটবেলা থেকেই দাঁতের সঠিক যত্ন ও ডেন্টিস্টের পরামর্শ শিশুর সুস্থ হাসি আর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

TEAM DR REYAD DENTAL

9/14/20251 min read

girl with red and white toothbrush in mouth
girl with red and white toothbrush in mouth

বেশিরভাগ অভিভাবক মনে করেন, দুধ দাঁত যেহেতু কয়েক বছরের মধ্যেই পড়ে যায়, তাই এর বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আসল সত্য হলো – দুধ দাঁতের যত্ন না নিলে শিশুর ভবিষ্যতের দাঁতের গঠন, কথাবলার দক্ষতা এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আজকের ব্লগে আলোচনা করব কেন দুধ দাঁত পড়ার আগেই শিশুদের ডেন্টাল কেয়ার জরুরি।

দুধ দাঁত কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
১. স্থায়ী দাঁতের জন্য জায়গা তৈরি করেঃ দুধ দাঁত স্থায়ী দাঁত ওঠার জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে। যদি দুধ দাঁত আগে থেকে নষ্ট হয়ে যায় বা তুলে ফেলতে হয়, তবে স্থায়ী দাঁত বেঁকে বা এলোমেলো হয়ে উঠতে পারে।

২. খাবার চিবানোর জন্য জরুরিঃ শিশুরা সঠিকভাবে খাবার চিবাতে শিখে দুধ দাঁতের মাধ্যমেই। দাঁত না থাকলে বা ক্যাভিটি থাকলে শিশুর খাবার চিবাতে কষ্ট হয়, এতে হজমেও সমস্যা দেখা দেয়।

৩. কথাবলার দক্ষতায় ভূমিকা রাখেঃ দুধ দাঁত শিশুর উচ্চারণ ও ভাষা শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দাঁত আগেভাগে হারালে উচ্চারণে সমস্যা হতে পারে।

৪. আত্মবিশ্বাসের সাথে হাসতে শেখায়ঃ সুন্দর দাঁত শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। দাঁতে সমস্যা থাকলে শিশুরা হাসতে বা সামাজিক মেলামেশায় সংকোচ বোধ করতে পারে।
শিশুদের দাঁত পরিষ্কার না রাখলে কী হতে পারে?
- ক্যাভিটি (দাঁতে গর্ত) – মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে দ্রুত হয়।
- মাড়ির প্রদাহ – দাঁতের চারপাশে সংক্রমণ হতে পারে।
- স্থায়ী দাঁতের ক্ষতি – আগে থেকে দাঁত নষ্ট হলে স্থায়ী দাঁত সঠিকভাবে গজায় না।
- পুষ্টির ঘাটতি – দাঁত ব্যথা বা ভাঙার কারণে শিশুরা অনেক খাবার খেতে পারে না।

শিশুদের দাঁতের যত্নে করণীয়-

ব্রাশিং অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ
  • প্রথম দাঁত ওঠার পর থেকেই নরম ব্রাশ ব্যবহার শুরু করুন।

  • দিনে অন্তত দুইবার ব্রাশ করার অভ্যাস করান।

স্বাস্থ্যকর খাবার দিনঃ
  • মিষ্টি, চকলেট, সফট ড্রিঙ্কস কমান।

  • দুধ, ফল, সবজি এবং ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার দিন।

ফ্লুরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করুন

সঠিক পরিমাণে ফ্লুরাইড দাঁতকে শক্ত রাখে ও ক্যাভিটি প্রতিরোধ করে।

নিয়মিত ডেন্টিস্ট ভিজিট
  • প্রথম জন্মদিনের মধ্যে শিশুকে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যান।

  • এরপর প্রতি ৬ মাস অন্তর নিয়মিত চেকআপ করুন।

অভিভাবকদের জন্য কিছু টিপস
  • শিশুর সামনে নিজেও দাঁত ব্রাশ করুন, এতে তারা অনুপ্রাণিত হবে।

  • ব্রাশকে মজার খেলায় পরিণত করুন – যেমন গান গেয়ে বা টাইমার ব্যবহার করে।

  • শিশুর দাঁত ব্যথা বা রক্ত পড়া দেখলে অবহেলা না করে সাথে সাথে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যান।

দুধ দাঁত পড়ার আগেই যত্ন নেওয়া জরুরি কারণ এগুলোই শিশুর ভবিষ্যতের স্থায়ী দাঁতের ভিত্তি তৈরি করে। নিয়মিত ব্রাশ, স্বাস্থ্যকর খাবার, এবং ডেন্টাল চেকআপ শিশুর দাঁতকে ক্যাভিটি ও অন্যান্য সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করবে।